ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫ , ১৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ই-পেপার

শিল্পে সংকট হলে কাউকে খুঁজে পাওয়া যায় না: শ্রম উপদেষ্টা

আপলোড সময় : ২৮-০৪-২০২৫ ১১:১৩:৫২ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ২৮-০৪-২০২৫ ১১:১৩:৫২ অপরাহ্ন
শিল্পে সংকট হলে কাউকে খুঁজে পাওয়া যায় না: শ্রম উপদেষ্টা
শ্রম উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, শিল্প খাতে যখনই কোনো সংকট তৈরি হয়, তখন কাউকে খুঁজে পাওয়া যায় না। তেমন পরিস্থিতিতে নিজেদের ভাসমান মনে হয়, কোথায় যেতে হবে জানি না। 

সোমবার (২৮ এপ্রিল) রাজধানীর একটি হোটেলে পেশাগত স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা নিয়ে আয়োজিত ‘ওএসএইচ সম্মেলন ২০২৫’–এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতর।

শ্রম উপদেষ্টা বলেন, যখনই কোনো সংকট হয়, তখন কিন্তু আমরা কাউকে খুঁজে পাই না। কিসের ট্রাইপার্টাইট (সংকট নিরসনে ত্রিপক্ষীয় কমিটি) আর কিসের কী; সংকট যখন আসে তখন আমি আর শ্রমসচিব নিজেদের ভাসমান অবস্থায় দেখি। কোথায় যেতে হবে জানি না। সুতরাং সংকটকালে সবাই টিম (একত্রে) হিসেবে কাজ না করলে তা কার্যকর হবে না।

এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এই মন্ত্রণালয়ের (শ্রম) দায়িত্ব নিয়েছি সাত মাস হলো। এ সময়ে যে পরিমাণে সংকট হয়েছে, সেগুলো সব কিন্তু এই সাত মাসে তৈরি হয়নি। যেমন অনেক তৈরি পোশাক কারখানায় শ্রমিকদের দুই-তিন বছরের বেতনও বকেয়া আছে। এই রোববার বিএটি বাংলাদেশের (ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, বাংলাদেশ) কিছু লোক এসেছিলেন, যাদের ২০১৯ সালে ছাঁটাই করা হয়েছিল। আমি (এই প্রসঙ্গে) বিএটিকে বলেছি, ফলো দ্য ল অর ওয়াইন্ড ইয়োর বিজনেস অ্যান্ড গো (আপনারা হয় আইন মেনে চলেন, না হয় এ দেশ থেকে ব্যবসা গুটিয়ে চলে যান)। বাধ্য হয়ে এমন শক্ত কথা বলতে হয়েছে। এ ছাড়া অন্য উপায় ছিল না।

শ্রমসচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, মানুষ নির্বিঘ্নে কর্মক্ষেত্রে যাবে, অথচ আমরা কাজের জায়গাগুলোকে মৃত্যুকূপ বানিয়ে রেখেছি। শ্রম সংস্কার কমিশন তাদের প্রতিবেদনে যেসব সুপারিশ দিয়েছে, তার প্রতিটি বিষয় নিয়ে কাজ করা হবে। এটা প্রধান উপদেষ্টার প্রতিশ্রুতি। সে জন্য সময় নির্দিষ্ট কর্মকৌশল গ্রহণের সুপারিশ এসেছে।

এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের যুগ্ম মহাপরিদর্শক মো. মতিউর রহমান। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) তথ্যানুসারে, সংশ্লিষ্ট দুর্ঘটনা কিংবা অসুস্থতার কারণে বিশ্বে প্রতি ১৫ সেকেন্ডে অন্তত একজন কর্মী মারা যান। কর্মক্ষেত্র–সংশ্লিষ্ট দুর্ঘটনায় যে আর্থিক ক্ষতি হয়, তা বৈশ্বিক জিডিপির ৪ শতাংশের সমান।

অনুষ্ঠানে ‘পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা কনভেনশন অনুসমর্থন’ বিষয়ে একটি প্যানেল আলোচনা হয়। সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশে আইএলওর প্রধান টুমো পুটিআইনেন।

বাংলাদেশে পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিয়ে অনুষ্ঠানে আরেকটি উপস্থাপনা দেন সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেইনিং বিভাগের পরিচালক হাসনাত এম আলমগীর। তিনি বলেন, কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনা নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হলেও পেশাগত অসুস্থতার বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে। যেমন- অনেক কর্মী লেড, অ্যাসিড প্রভৃতি রাসায়নিকের কারণে দীর্ঘমেয়াদি ও জটিল অসুস্থতায় পড়েন। রিকশা-সিএনজি চালক, ট্রাফিক পুলিশসহ পরিবহন খাতে যুক্ত মানুষদের বড় একটি অংশ ঠিকঠাক কানে শোনেন না। এ ছাড়া শ্রমিকেরা ঠিক সময়ে বেতন না পেলে তাদের মানসিক স্বাস্থ্যে বিরূপ প্রভাব পড়ে। সুতরাং দুর্ঘটনার পাশাপাশি এসব বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।

বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের (বিইএফ) মহাসচিব ফারুক আহমেদ বলেন, অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতেও পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা (ওএসএইচ) কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, সেটি দেখা প্রয়োজন। কারণ ওএসএইচ বাস্তবায়নে শুধু আলোচনা না করে সময় নির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা নেওয়া প্রয়োজন।

নিউজটি আপডেট করেছেন : mainadmin

কমেন্ট বক্স

প্রতিবেদকের তথ্য

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ